হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের মেধাবী ছাত্রী মাসরুফা আরফিন সবার কাছে মিম নামেই পরিচিত। তবে ক্যাবের মাধ্যমে নতুন পরিচিতি পেয়েছেন পাঞ্জাবী আপু হিসেবে। শুরুটা অফলাইনে হলেও পরে অনলাইনে এসেছেন সময়ের প্রয়োজনেই। চলুন আজকে জেনে নেই পাঞ্জাবী আপুর উদ্যোগের খুঁটিনাটি।
করোনাকালে সব বন্ধুরা যখন ঘরে বসে না থেকে নানা রকম উদ্যোগ করছিল , তা দেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহাডাঙ্গা এলাকার অধিবাসী মিমেরও ইচ্ছা হলো কিছু করার। কিন্তু পুঁজি ছাড়া তো আর ব্যবসা সম্ভব না। আবার পরিবারেরও প্রাথমিক সম্মতি নেই। অনেকটা কৌশলেই মা আর খালার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে ফেললেন। তারপর একদিন ঢাকা থেকে প্রোডাক্ট কিনে আনলেন।
কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেলেন। ইউনিক কালেকশন থাকায় প্রোডাক্ট আনার সাথে সাথেই স্টক শেষ হয়ে গেলেও এলাকায় সবাই বাকিতে প্রোডাক্ট নিয়ে চলে যায়। ফলে নতুন করে স্টক কেনার অর্থও ফুরিয়ে গেল। মিম বুঝতে পারলেন এভাবে হবে না। অনলাইনের গুরুত্ব তখনই বোঝা গেল। কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন? অনলাইন মার্কেটিং, কাস্টমার হ্যান্ডেলিং, কুরিয়ার এসব বিষয়ে কোনই ধারনা নাই। ক্যাবেরই আরেক সফল উদ্যোক্তার সহযোগিতায় প্রাথমিক তথ্য নিয়ে খাদি পাঞ্জাবী দিয়ে শুরু করলেন অনলাইন যাত্রা। ক্যাব থেকেই এসেছে বেশিরভাগ সাড়া । ফলে অনলাইন যাত্রাটা ক্যাবের কারণে অনেক মসৃণ হয়েছে।
ছোট্ট এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যে আয় হয়েছে তার কিছু অংশ পরিবারকে দিতে পারাটাই সবথেকে বড় অর্জন বলে মনে করেন। এছাড়া সবার পরিচিতি অর্জন এবং ভালোবাসা অর্জনটাও অনেক বড় প্রাপ্তি।
তার উদ্যোগের সবথেকে চ্যালেঞ্জিং বিষয় হচ্ছে মার্কেটিং অনুযায়ী কাপড়ের কোয়ালিটি চেক নিশ্চিত করা এবং কাস্টমারের হাতে পৌঁছানোর পর কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জন পর্যন্ত অপেক্ষা করা। তবে এতসব সামলাচ্ছেন পড়ালেখার পাশাপাশিই। ক্যাম্পাস খুলে গেলেও উদ্যোগে বিরতি নেন নি। দুইটা পাশাপাশি অনেক কষ্টের হলেও তা মনোবলের জোরে চালিয়ে নিতে পারছেন বলে মনে করেন।
এইকারণেই তরুণ যারা এইরকম উদ্যোগে আসতে চান তাদের জন্য মিমের পরামর্শ মনের ইচ্ছাশক্তিই পারে যেকোন কাজের পাশাপাশি নিজেদের ছোট ছোট উদ্যোগ বা স্বপ্নগুলোকে এগিয়ে নিতে। হতাশ না হয়ে টানা লেগে থাকার পরামর্শ তরুণ এই উদ্যোক্তার।
0 coment rios: