উদ্যোক্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গড়ে ওঠা গ্রুপ - চাঁপাইনবাবগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব বিজনেস তথা ক্যাবের একজন সুপরিচিত মুখ আরিফা জেবিন।
তবে এখন তিনি 'কুমড়োর বড়ি আপা' নামে অধিকতর পরিচিত। আমরা প্রায় সবাই জানি, লেখাপড়ার প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ভবিষ্যতে ভালো একটা চাকরি করা। কিন্তু আরিফা জেবিনের ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা ছিল অন্যরকম। চাকুরী পছন্দ না হওয়ায় লেখাপড়া শেষ করে হতে চেয়েছিলেন একজন সুশীল, সুন্দর, দায়িত্ববান গৃহিণী । বিয়ের পর স্বামী, সংসার নিয়ে ভালোই দিনাতিপাত করছিলেন তিনি । কিন্তু হঠাৎ করে করোনার সময়টা তার জীবনে কাল হয়ে আসে। ছেলে-মেয়েদের স্কুল বন্ধ, ব্যাস্ততা কম, বাসায় সারাদিন বসে থাকাটা একটা বিরক্তিকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য।
তিনি ভাবতে থাকলেন নিজের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে কীভাবে অলস বসে না থেকে সময়কে কাজে লাগানো যায়। অনেক ভাল রান্না পারেন বলে দেরী না করে হোমমেড খাবার বানানো শুরু করেন। খুব অল্প সময়ে নিজেকে সবার সামনে ভালো রাধুনি হিসেবে আবিস্কার করেন।
আরিফার হাতের বানানো কুমড়োর বড়ি সবার কাছে বেশ প্রশংসনীয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার পেজ হয়েছে, নাম 'হাঁরঘে বড়ি বাড়ি'। এই পেজে এবং অনলাইন বিভিন্ন গ্রুপে তিনি বড়ি সহ কিছু পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন। অনলাইনে এবং অফলাইনে যারা তার থেকে পণ্য নিয়েছেন সবাই তার পণ্যের ভালো রিভিউ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান বাসায় নিজ হাতে তৈরি কুমড়োর বড়ি, যেটা শতভাগ খাঁটি এবং অনেক সুস্বাদু।
এজন্য তাকে দিতে হয় সময় ও কঠোর শ্রম। প্ররিশ্রম অনুযায়ী বাজারদর নিয়ে তিনি একটু চিন্তিত। তিনি জানান তার বানানো বড়ির বড়ির দাম শুনে অনেকে চমকে ওঠে। তিনি বলেন, 'আমি চেষ্টা করি, নিজের সাধ্যের মধ্যে রেখে, দামে কম মানে ভালো খাবার মানুষদের কাছে পৌঁছে দিতে।'
তিনি নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন তাই তিনি মনে করেন সমাজে সকল মেয়েরা স্বাবলম্বী হোক। তার ভাষ্যমতে সমাজের মানুষ এখনো চায়না যে মেয়েরা ব্যবসা-বাণিজ্য করুক। এই পথ বন্ধুর নয়। মেয়ে হয়ে ব্যবসা করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ আরো বেশি। কেননা পরিবারের সবকিছু সামলানোর পাশাপাশি করে ব্যবসা করা লাগে। তবে আমাদের আজকের গল্পের আকর্ষণ সফল উদ্যোক্তা আরিফা বিশ্বাস করেন যে, সবাই যদি সততা নিয়ে কাজ করে, তাহলে জীবনের সফলতা অবশ্যই আসবে।
0 coment rios: